1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫১ অপরাহ্ন
৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
Latest Posts
📰প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দীন📰আন্দোলনে সাধারণের পক্ষে দাঁড়িয়ে আস্থার প্রতীক হয়েছে সেনাবাহিনী : ড. ইউনূস📰অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা, সাতক্ষীরা সীমান্তে আটক ২📰উপকূলীয় জীবনের সুরক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে বাগেরহাটে মানববন্ধন📰‘উপকূলীয় নারীদের সফলতা ও জ্ঞানের কথা’ শীর্ষক অভিজ্ঞতা সভা📰বর্ণাঢ্য আয়োজনে সপ্তাহ ব্যাপি বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন📰আশাশুনির বুধহাটা ক্লাস্টারের দুরাবস্থাগ্রস্থ ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাণের ঝুঁকির মধ্যে চলছে ক্লাশ 📰আশাশুনিতে উপজেলা শুমারী  কমিটির সভা অনুষ্ঠিত📰পাইকগাছায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ!প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি📰জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে সাতক্ষীরাতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

শ্যামনগরের ৫ জয়িতার গল্প

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : মঙ্গলবার, ২২ মে, ২০১৮
  • ৬৪৪ সংবাদটি পড়া হয়েছে

রাবেয়া খাতুন
নির্যাতনের বিভিষীকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী, তিনি বলেন আমি রাবিয়া খাতুন, পিতা- রফিকুল ইসলাম, গ্রাম- চালিতাঘাটা। নির্যাতনের বিভিষীকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছি। আমার পিতা একজন অতি দরিদ্র দিন মজুর। আমরা ২ বোন ১ ভাই। সবার বড় আমি। আমি যখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি তখন আমার পিতা আমার লেখাপড়ার খরচ বহন করতে না পারায় ২০১৪ সালে বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মিঠু গাজীর সাথে আমার বিবাহ দেয়। বিবাহের পর থেকেই আমার স্বামী আমাকে আমার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনতে বলে। আমি তখন বলি আমার পিতা একজন অতি দরিদ্র দিন মজুর। তিনি যৌতুকের টাকা দিতে পারবেন না। তখন থেকে শুরু হয় আমার উপর অমানবিক নির্যাতন। এর মধ্যে আমার গর্ভে একটি সন্তান আসে। তখন আমার স্বামী ও শ্বশুর সহ বাড়ির লোকজন গভের সন্তান নষ্ট করতে বলে। আমি রাজি না হলে আমার স্বামী আমাকে মারধর করে বাবার বাড়িতে পাঠাই। বাবার বাড়ি আসার কিছুদিন পরে আমার একটি ছেলে জন্মগ্রহণ করে। আমার ছেলের বয়স ৩ মাস হলে আমি স্বামীর বাড়ি ফিরে যাই। চিন্তা করি সন্তানের মায়ায় স্বামী ও শ্বশুর সহ বাড়ির লোকদের মন ভালো হতে পারে। আমার ছেলেকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি যাওয়ার পর আমার উপর আবার নির্যাতন চালতে থাকে এবং আমার সন্তান ও আমাকে হত্যা করার জন্য চেষ্টা করতে থাকে। একদিন রাতে আমার স্বামী আমাকে ঘুমের মধ্যে শ্বাস রোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হলে পরে লাঠি দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জখম করে। রক্তাক্ত অবস্থায় আমার পিতা আমাকে শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি করে। সুস্থ হয়ে আমি বাবার বাড়িতে চলে আসি এবং সাতক্ষীরা কোর্টে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করি। বর্তমানে মামলাটি সাতক্ষীরা কোটে বিচারাধীন। আমি আমার অতীতের সমস্ত গ্লানী ভুলে বর্তমানে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছি। একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে সেলাই প্রশিক্ষন গ্রহণ করি এবং তারা আমাকে একটি সেলাই মেশিন প্রদান করে। বর্তমানে আমি বাবার বাড়িতে সেলাই মেশিনে কাজ করে নিজের ও সন্তানের খরচ বহন করছি। আমি আশা করি ভবিষ্যতে আমার সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলব। তাই নিজেকে আমি একজন জয়িতা নারী মনে করি।
সেলিনা সাঈদ
আমি সেলিনা বেগম, সমাজ উন্নয়নে অসামন্য অবদান রেখে সাফল্য অর্জনকারী নারী। আমি সেলিনা বেগম, পিতা- মরহুম শামসুর রহমান, মাতা- মোমেনা বেগম, গ্রাম- বড় ভেটখালী, ইউপি সদস্য মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড। সমাজ উন্নয়নে আমার কর্মকান্ড আমার জীবনটা জন্ম থেকেই অভিশপ্ত। শিশু কালে বুঝিনি অনাহারকৃষ্ট জীর্ন-শীর্ন শরীর নিয়ে কারণে নানা ভাবে শারীরিক, মানসিক ও অমানবিক নির্যাতন করে। দীর্ঘ ৬ বছর পর আমার পিত্রালয়ে ফিরে যায়। আমার তখন ১ ছেলে এবং আমি গর্ভবতী। শেষে জন্ম নিল ১ মেয়ে। মেয়েটা ১৯ দিন পর মারা গেল। তারপর আবার শুরু হলো মানসিক নির্যাতন। আজ বিয়ে করে কাল বিয়ে করে এভাবে ভয় দেখাতে লগলো। আমি উপয়ান্ত না পেয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি লেখাপড়া শিখব। মানুষের কাছে আর মাথানত করবো না। আমি শক্তি অর্জন করবো। আমি আমার পিতাকে বললাম আবার আমি পড়শুনা করবো। আমার পিতা আমার কথা শুনে অবাক হলেন এবং সম্মতি দিলেন। তারপর থেকে আবার আমার শিক্ষাজীবন শুরু হলো। দেবহাটা টাউন শ্রীপুর হাইস্কুলে ভর্তি হলাম ১৯৮১ সালে ১০ জানুয়ারী। ১৯৮৩ সালে পরীক্ষা দিয়ে ১ বিষয় ফেল করি। তারপর আমি আবার কাশিমাড়ী হাইস্কুলে এসে ভর্তি হই ও পাশ করি। মেট্রিক পরীক্ষা যখন দিই আমার পেটে তখন আবার ও সন্তান এসেছে এবং মেট্রিক পরীক্ষার ২৬ দিন পর আমার ছোট ছেলের জন্ম হয়। মহসীন কলেজে ভর্তি হই। একই বছরে আবার পিটিআই পড়ি তখন আমার ছোট ছেলের বয়স মাত্র ৭ মাস। ওকে রেখে আমি পিটিআই হোস্টেলে যেয়ে উঠি। খুব কষ্ট করে পিটিআই পাশ হলো। সেই থেকে যশোর যেয়ে কোর্স করতে লাগলাম। যশোর যেয়ে টাইপিষ্ট ভর্তি হলাম। টাইপিষ্ট শিখে চাকুরি করতে লাগলাম। সেখান থেকে অন্যত্র চাকুরির চেষ্টা করতে লাগলাম। ১৯৮৯ সালে শেষ দিকে দরখাস্ত করলাম এবং এফডব্লিওএ- লিখিত ও ভাইবা পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ন হয়ে চাকুরী জীবন শুরু হলো। ০১/০১/৯০ তারিখে আমি চাকুরিতে যোগ দিলাম তখন আমার বেতন ছিল মাত্র ১২৮০ টাকা। আমি খুব খুশি হলাম যে, আমার কারো দ্বারে হাত পাততে হবে না। আল্লাহর কাছে শোকর আদায় করলাম। আমার চাকুরির বেতনের টাকা যতই আসুক না কেন সেটা আমি আমার স্বামীর হতে তুলে দিব। কিন্তু আমার স্বামী ১৯৮৫ সাল থেকে অন্য মেয়ের দিকে নজর দিতে থাকলো ও আমার সঙ্গে বিবাদ কলহ করতে লাগলো। আমার স্বামী আমাকে অকথ্য নির্যাতন করতো। ব্লু-ফ্লিম দেখে আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিত মানুষের কাছে। ২০০৯ সালে আমাকে না জানিয়ে ২য় বিয়ে করে। যেই থেকে আমি এ বিষয় জানতে পারলাম আমাকে আরও মানবিক নির্যাতন করতে থাকলো। অদ্যবধি আমাকে ছাড়িয়া ছোট বউয়ের সাথে থাকতে শুরু করলো। সেই থেকে আমার কোন ভরন পোষন সে করে না এবং আমাকে ঋণে জর্জরিত করে চলে গেল। সেই সব ঋণ আমাকে পরিশোধ করতে হলো। আমি খুব কষ্টের মধ্যে আছি। দিন কারো জন্য বেধে থাকে না। আমার এই পরিণতি দেখে আমার পিতা আমার ছোট বোনদের লেখাপড়া শিখিয়েছেন। আমার এক বোন ঢাকা ইংরেজী আল মানারাত স্কুলে শিক্ষাকতা করে। অংকে অনার্স, ইংরেজীতে অনার্স, এম এ। এক বোন সাতক্ষীরা প্রাইমারী স্কুলের হেড মাস্টার। ১ বোন দেবহাটা চেয়ারম্যানের বউ টাউন শ্রীপুর প্রাইমারি শিক্ষক। এই দুই বোন এমএ পাশ করেছে। পরিশেষে আমি চাই সে ভালো থাকুক আর আমি ভালো আছি। আগামীতে আমার জীবনে যতই ঝড় বাধা বিঘœ আসুক না কেন আমি ভয় পাই না। আমি মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকতে চাই।
আসমা বেগম
আমি আসমা বেগম, আমার পিতা তাবলীগ জামাত করতেন। মেয়েদের লেখাপড়া শিখাবার কোন ইচ্ছা ছিল না। মেয়েদের কোন রকম বাংলা শিখলেই হলো। বিধাতার লিখন না যায় খন্ডন। আমি নবম শ্রেণীতে পড়তে পড়তে আমার পড়া বন্ধ হয়ে গেল। ১৯৭৬ সালে ইং ২৩ এপ্রিল রোজ শুক্রবার মোঃ রাজাগুলা বাহারের সাথে আমার বিবাহ হয়। বিয়ের পর যৌতুক না দেওয়ার
শেফালী বেগম
আমি শেফালী বিবি, স্বামী- ছবেদ আলী গাজী, গ্রাম- দাতিনাখালি। আমি আমার নিজ ভাগ্য উন্নয়নে কঠোর পরিশ্রম করে পরিবারের হাল ধরে আর্থিকভাবে লাভবান হই। সুন্দরবন সংরক্ষন ও বনজীবিদের জীবনের মান উন্নয়নের জন্য এলাকার বন নির্ভর নারীদের নিয়ে বনজীবি নারী উন্নয়ন সংগঠন গড়ে তুলে কাঠ বর্হির্ভূত বনজ সম্পদ দ্বারা কেওড়ার চকলেট, শুকনা আচার, জেলী (টক, ঝাল,মিষ্টি), জেলী (টক, মিষ্টি) ও কেওয়ার নোড়া এবং সুন্দরবনের সংগৃহীত মধু পরিশুদ্ধ করে বোয়েম জাত, মোম দিয়ে বিভিন্ন প্রকারের মোমবাতি, শোপিচ, সীট তৈরি, আরি-জুরি ও বাটিক বুটিকের কাজ করে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে অর্গানিকভাবে প্রস্তুতকৃত এসব পন্য আধুনিকতার ছোয়ায় বোয়েম/প্যাকেট জাত করে বিক্রয় করি। এসকল পন্য বিক্রয়ের লভ্যংশ বাঘ বিধবা ও বনজীবি নারীদের ভাগ্য উন্নয়নে ব্যয় করেছি। আমি নিজের প্রচেষ্টায় অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন করে এলাকায় একটি রোল মডেলে পরিণত করছি।

হামিদা রহমান
আমি হামিদা রহমান, স্বামী – মোঃ ছাবিলুর রহমান সরদার, পিতা- মৃত পরান আলী গাজী, মাতা- মৃত বিবিজান, গ্রাম- জয়নগর। বিবাহের পর হতে নি¤œ আয়ের পরিবারের স্বামী সন্তান নিয়ে দিনাতিপাত করি। আমার স্বামী পর পর দুই মেয়াদে মেম্বর ছিলেন। আমার স্বপ্ন ছিল ছেলে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করা। সেমতে তাদের পড়া লেখা করায়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে সুখ শান্তিতে বসবাস করছে। আজ আমি গর্বিত মা। আনন্দে বুকটা ভরে যায়। শতকাজের মাঝে যখন সন্তানদের মুখের হাসি দেখি তখন নিজেকে একজন গর্বিত মা হিসাবে মনে করি। আজ আমি একজন গর্বিত মা হিসাবে আল্লাহর নিকট শুকুরিয়া আদায় করি। দোয়া করি সব পিতামাতা যেন তাদের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষিত করে সমাজের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে। আল্লাহ আমাদের সহায় হউন।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2024
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd