সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেল সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত মুক্তামনি।(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার সকালে বিরল রোগ হেমানজিওমায় আক্রান্ত মুক্তামনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হেরে গেছে।
মুক্তামনি তার নিজ বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামে মারা যায়। এ খবর জানাজানি হতেই সাতক্ষীরার মানুষ শোকাতুর হয়ে ওঠেন। মুক্তামনির বাড়িতে তাকে শেষ বারের মত দেখতে শতশত মানুষ সকাল থেকেই ভীড় জমাতে শুরু করেছে। মৃত্যুর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল।
উল্লেখ্য, কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহিম হোসেনের মেয়ে ১৩ বছরের মুক্তামনির দেহে দেড় বছর বয়সে একটি মার্বেলের মতো গোটা দেখা যায়। সেটি ধীরে-ধীরে বড় আকার ধারণ করতে থাকে। এক সময় তার ডান হাতটি একটি গাছের ডালের আকার ধারন করে। ২০১৭ সালের জুলাই মাসের প্রথম দিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মুক্তামনির রোগের কথা প্রচারিত হলে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামনির চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেন।মুক্তামনির চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গেও যোগাযোগ করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ ছয় মাসের চিকিৎসায় খানিকটা উন্নতি হওয়ায় ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর মুক্তামনিকে এক মাসের ছুটিতে বাড়ি পাঠানো হয়। বাড়ি আসার পর থেকে তার অবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে যেতে থাকে। তার দেহে নতুন করে পচন ধরে। পোকা জন্মায়, রক্ত ঝরে। তার ওষুধপত্র বন্ধ হয়ে যায়। দিনে একবার করে তার ড্রেসিং করা হতো।
মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন মুক্তামনির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, বুধবার সকাল সোয়া ৮ টার দিকে মুক্তা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। এদিকে, মুক্তামনির মৃত্যুতে সাতক্ষীরাজেলাসহ দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Leave a Reply