স্টাফ রিপোর্টার : আজ বসস্ত। ফুলে ফুলে ভরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেনো বসন্তকে স্বাগত জানাতে অধীর অপেক্ষায়।
বসন্তের প্রাক্কালে নানা বর্ণের ফুল ফুটেছে খুলনা বিশ্বদ্যিালয় ক্যাম্পাসে। ডালিয়া, জিনিয়া, হরেক রকম গাদা, গোলাপের মতো নাম জানা নানা বর্ণের ফুল তো আছেই, তার সাথে ফুটেছে এবার নতুন নতুন নামের নানা আকার ও বর্ণের অসংখ্য ফুল। আকাশী সাদা স্লোবল, সালভিয়া, দোপাটি, ক্যালেন্ডোলা, দায়েনথাঁচ, ফ্লোগর্স, ইন্টালিয়াম, ¯œাকড্রাগন, পেনজি, কারিয়াফছি, ভারবিনা, পিটুনিয়া, ষ্টার গোল্ড, মৌচন্ডা, পানচাটিয়া, এ্যালমন্ডা, গ্লাডিয়া তালপাম্প, চন্দ্রমল্লিকা, ইনকা গাদা, চাইনিজ গাদা, জাম্বুস গাদা, মোরগ ঝুঁটি, কসমস, জুঁই, চামেলি ছাড়াও আছে টগর, বেলি এবং সাইকাস, ক্রিসমাস, জবা, পাতাবাহার রঙ্গন স্থায়ী নানা জাতের ফুল। সব মিলিয়ে ২৫-৩০ প্রকারের নানা জাতের ফুল ফুটেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।
শীতকালীন নানা প্রজাতির প্রস্ফুটিত এই ফুলের সমারোহে এখন সুশোভিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ফুলে ফুলে সজ্জিত ক্যাম্পাস যেনো শিল্পীর তুলিতে আঁকা নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য্যমুগ্ধ কোনো ছবি। আর ফুলে সুশোভিত ক্যাম্পাস দেখতে আসছেন প্রতিদিন প্রচুর দর্শক। তাঁরা ফুলের বাগানে ঘুরছেন। ছবি তুলতেই যেন তারা বেশি ব্যস্ত। তবে সেলফি তুলতেও ভুলছেন না। বেশিরভাগই আসছেন সপরিবারে। আবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে খুলনায় শিক্ষাসফরে বা পিকনিকে আসা শিক্ষার্থী বা যুবক যুবতী, বন্ধু-স্বজনসহ নানা বয়সের মানুষও আছেন। এমনকি খুলনায় আসা বিদেশী পর্যটকরাও একবার আসছেন ক্যাম্পাসের এই ফুলের শোভা দেখতে। এবার সবচেয়ে নানা জাতের ফুল বেশি ফুটেছে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে ও বাইরে। এর পর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে। আবাসিক হল গুলোতেও ফুটেছে নানা বর্ণের ফুল। তবে খানবাহাদুর আহসানউল্লা হল এবং অপরাজিতা হলে ফুলের সংখ্যা বেশি। আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনেও এবার নতুন জাতের ফুল ফুটেছে। আর জারবেরা সেন্টারেও ফুটেছে নানা বর্ণের জারবেরা ফুল।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান ক্যাম্পাসে ফুল চাষে বিশেষভাবে আগ্রহী। গত কয়েক বছর ধরেই তিনি ফুলের বাগান সৃজনে এবং নতুন নতুন ফুল চাষে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর তত্ত্বাবধানেই বিশেষ করে তাঁর বাসভবনের বাইরে ও ভেতরে এবং প্রশাসনিক ভবনের সামনে পরিকল্পিতভাবে শীতকালীন ফুল চাষ হয়েছে বলে জানা যায়। প্রতিদিন সকাল-বিকেলে ঘুরে ঘুরে তিনি দেখেন কোথায় কি সমস্যা। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। এ ব্যাপারে তাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ফুলের সৌন্দার্য মানুষকে মুগ্ধ করে। মানুষের চিত্তে এক ধরণের বিনোদন ও প্রশান্তি যোগায়। বিশ্ববিদ্যালয় শত সম্ভাবনার জায়গা। এখানে ফুলের সমারোহ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। উপাচার্য বলেন, আমি গত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছি ক্যাম্পাসে ফুলের বাগান বি¯তৃতির জন্য। তিনি ভবিষ্যতে সকল ভবনের সামনে এবং অন্যান্য সম্ভাব্য খোলা স্থানে ফুলের বাগান সৃষ্টিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট (সম্পত্তি) শাখার উপ-রেজিস্ট্রার কৃষ্ণপদ দাশ জানান এ বছর নানা জাতের ফুলের চারা লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে কেবল গাদা ফুলই আছে ৪-৫ জাতের। অন্যান্য ফুলের নতুন নতুন কয়েকটি জাতও এবার লাগানো হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও এবার ভালোভাবে ফুল ফোটায় আমরা খুশি। তিনি বলেন উপাচার্যের ব্যক্তিগত আগ্রহ ও তত্ত্বাবধানের কারণে সময়মতো ফুল চাষ সম্ভব হয়েছে। তবে এবার আবহাওয়ার যে অবস্থা তাতে আশংকায় আছি। কুয়াশা তুলনামূলক কম হলেও ভয় বৃষ্টি নিয়ে। বৃষ্টি হলেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে। প্রতিদিন প্রচুর দর্শক আসছেন। আমরা তাদের ফুলের সৌন্দার্য্য উপভোগ করতে বা ছবি তুলতে বাঁধা দেই না। তবে ফুল যাতে কেউ না ছিঁড়ে সে অনুরোধ জানাই। কারণ ফুল গাছে থাকতেই শোভা বৃদ্ধি পায়। উপাচার্যের ভবনের সামনে এবার যে দু’টি স্থানে নতুন বাগানে সব প্রজাতির ফুল ফুটেছে। বাগানের মালি মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেন, এবার প্রথম ফুল লাগানো হয়েছে। মাটির অবস্থা এখনো অতোটা উপযোগী না হলেও ভালো ফুল ফুটেছে। উপাচার্য স্যার প্রতিদিন এই বাগান দেখেন। আমাকে নানা নির্দেশনা দেন। আমি সব সময়ই খুব যতœ নিচ্ছি। আগামী বছর আরও ভালো হবে আমার আশা।
এদিকে ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানাতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে দিনব্যাপী বসন্তবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
Leave a Reply