এসবিনিউজ ডেস্ক : আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্থানীয় সরকার পদে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। তারা রাজনৈতিক সংগঠন করারও সুযোগ পাবেন। তবে সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকসহ প্রজাতন্ত্রের কোনো কাজে তারা নিয়োগ লাভ করতে পারবেন না।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা বলেন। মন্ত্রী জানান, নাগরিকত্ব আইনের খসড়ায় বিভিন্ন বিষয়ে ইতিমধ্যে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত নাগরিত্ব আইন-২০১৬ নিয়ে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে প্রবাসীদের সংগঠন সেন্টার ফর ননরেসিডেন্ট বাংলাদেশিজ। আলোচনায় প্রবাসী ও বিশেষজ্ঞরা প্রস্তাবিত আইনের বিভিন্ন দুর্বল দিক তুলে ধরেন।
সেন্টার ফর ননরেসিডেন্ট বাংলাদেশিজের চেয়ারপারসন এম এস সেকিল চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, ড. শাহ্দীন মালিক, অধ্যাপক সি আর আবরার, অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা, ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন, প্রবাসী আল মামুন সরকার প্রমুখ অংশ নেন। মূল প্রবন্ধে এস এম সেকিল চৌধুরী বলেন, ‘পিতা-মাতার অপরাধে সন্তানের নাগরিকত্ব বারিত হওয়া সাধারণ মানবিকতার পরিপন্থী। এ ছাড়া সংবিধান ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অনুস্বাক্ষরকৃত আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এর ফলে মানুষের স্টেটলেস হওয়ার অবকাশ থাকে। সুতরাং আইনের ৫(৩) ধারাটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি।
’ তিনি বলেন, ‘দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণকারী প্রবাসীদের সংবিধান স্বীকৃত সুযোগসমূহ অবারিত রেখে আইন প্রণয়নের আহ্বান জনাচ্ছি। এতে তারা বিভিন্ন দেশে অবস্থান ও অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কল্যাণে অবদান রাখতে পারবে। ’ আলোচনায় বক্তারা বলেন, মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত নাগরিকত্ব আইনে প্রবাসী নাগরিকদের স্থানীয় সরকার পদে নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সংগঠন করার বিষয়ে সীমাবদ্ধতা রাখা হয়েছে। এর জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, ভেটিংয়ের সময় আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়টি তুলে দিয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি ধারা নিয়ে আপত্তি ওঠায় তা সংশোধন এবং কিছু ধারা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইন নাগরিক ও প্রবাসীবান্ধব হবে। আমরা এমন কোনো আইন করব না, যা জনবান্ধব হবে না। আমরা যাদের (প্রবাসী) ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল, তাদের ক্ষতি হোক এমন আইন করিনি। ’ তিনি বলেন, ‘আইনে এমন কোনো ধারা রাখা হবে না, যাতে প্রবাসীরা ‘রাষ্ট্রহীন’ হয়ে পড়েন। যে দেশের নাগরিকই হোক, সম্পত্তির ওপর প্রবাসীদের অধিকার থাকবে। এ আইনে আমরা নাগরিকের কোনো অধিকার খর্ব করিনি। সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট সব দেশেই আছে, আমাদেরও প্রয়োজন। তবে এমন আইন করা হবে না, যা নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে।
Leave a Reply