এসবিনিউজ ডেস্ক : সারা দেশে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী ৯৪টি উপজেলায় এ কার্যক্রম চলবে। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য ইতিমধ্যে অনলাইনে ১ লাখ ২৩ হাজার ১৫৪টি আবেদন জমা পড়েছে। এই কার্যক্রমে এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর অন্যান্য কার্যক্রম শেষে আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আগেই প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত তালিকা।
প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে মহানগর এবং উপজেলা কমিটির রূপরেখা এবং কাঠামো চূড়ান্ত করে ৪৭০টি কমিটি করা হয়েছে। যার তালিকা ইতিমধ্যেই মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এই কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।
এই কমিটি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্তকরণ, আবেদনকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই, তালিকাভুক্ত দাবীদার মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই এবং তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ নিষ্পত্তির কাজ করবে। শনিবার থেকে কমিটিগুলো কাজ শুরু করেছে।
প্রথম দিনে সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল থেকে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এ বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ধান্দিয়া ও নগরঘাটা ইউনিয়নে সম্পূর্ণ এবং সরুলিয়া ইউনিয়নে আংশিক যাচাই-বাছাই কাজ সম্পন্ন হয়। আগামী ২৮ জানুয়ারি অবশিষ্ট ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্তির জন্য উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন থেকে ৪৯৪জন আবেদন করেছে। তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকে ৫২জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: মফিজ উদ্দীন জানান। এই কমিটি বাছাইকালে আবেদনকারীদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন।
তালা উপজেলায় সাত সদস্যের মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সদস্যসচিব আছেন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফরিদ হোসেন, সদস্য হিসেবে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের প্রতিনিধি জি,এম,এ সবুর, জেলা কমান্ডারের প্রতিনিধি মোঃ মঈনুল ইসলাম, উপজেলা কমান্ডার মোঃ মফিজ উদ্দীন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি শেখ আবুল খায়ের এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের প্রতিনিধি এস,এম ফজলুল হক।
আগামী ২৮ জানুয়ারি এবং ৪, ১১ ও ১৮ ফেব্র“য়ারিতে উপজেলা, জেলা এবং মহানগর পর্যায়ে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলবে।
উল্লেখ্য, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণ না করার বিষয়ে আদালতে রিট হলে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম ঝুলে যায়।
গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে ওই রিট নিষ্পত্তি হওয়ার পর মন্ত্রণালয় আর অপেক্ষা না করে দ্রুত গেজেটভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করতে উদ্যোগ গ্রহণ করে। আদালত বিষয়টির সুরাহা করায় শনিবার থেকে দেশব্যাপী মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই শুরু হয়।
গত ৭ জানুয়ারি এই বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়াগত কারণে ঘোষিত তারিখ কিছুটা পরিবর্তন করা হয়। ঘোষিত নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি যেসব জেলা ও উপজেলা/মহানগরে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম হওয়ার কথা ছিল, সেটি ১১ ফেব্র“য়ারি এবং ১৪ জানুয়ারির যাচাই-বাছাই কার্যক্রম ১৮ ফেব্র“য়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া অন্যদিনগুলো ঠিকই থাকবে।
Leave a Reply