এসবিনিউজ ডেস্ক : টুঙ্গিপাড়ার মানুষের কাছে শুক্রবারের সকালটি ছিল বৈচিত্র্যময় ও ব্যতিক্রমী। কোলে এক নাতি, পাশে আরেক নাতনি। হাস্যজ্জ্বল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যানের সামনের দিকে বসেছিলেন। ভ্যানের অপর পাশে সামনের দিকে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও তার স্ত্রী পেপি। গোপালগঞ্জ সফররত প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার পরিবারের এ সদস্যদের নিয়ে ভ্যানে চড়ে গ্রামবাসীদের বিস্মিত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা উপেক্ষা করে গ্রামের মানুষের অবস্থা জানতে ও গ্রামবাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে তাঁর নিজ গ্রাম টুঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে রিকশা ভ্যানে চড়ে প্রায় ১৫ মিনিট গ্রামটি পরিদর্শন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতিসৌধ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার পর্যন্ত যান।
এ সময় বিভিন্ন স্থানে ভ্যান থামিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় মানুষ-জনের সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা বলেন ও তাদের কুশলাদির খোঁজ-খবর নেন। প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে স্থানীয় মানুষও বিস্ময় ও উচ্ছ্বাসের সঙ্গে প্রাণ খুলে তাঁর কাছে সুখ-দুঃখের কথা বলেন। এ সময় তারা তাদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরলে শেখ হাসিনা তাৎক্ষণিকভাবে এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। মানুষকে আরো অবাক করে দিয়ে তিনি ফেরার পথে এই এক কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে আসেন।
প্রধানমন্ত্রী রোভার স্কাউটের সবচেয়ে বড় সম্মিলন ১১তম জাতীয় রোভার মুট উদ্বোধনের জন্য বৃহস্পতিবার দু’দিনের সফরে গোপালগঞ্জ আসেন। মুট উদ্বোধনের পর তিনি টুঙ্গিপাড়া আসেন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করেন এবং বিশেষ মুনাজাতে শরিক হন।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জ শহরের ব্যাংকপাড়ায় বর্তমানে গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগ অফিস হিসেবে ব্যবহৃত বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাড়ি পরিদর্শন করেন। শপথ গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাসভবনে এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর। বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমান ৫০ এর দশকে গোপালগঞ্জ শহরের ব্যাংক পাড়ায় বাড়িটি ক্রয় এবং বাসস্থান হিসাবে ব্যবহার করেন।
শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে রাত যাপন করেন। বাস ভবন থেকে বের হয়ে বিকাল ৩ টা ৩০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধের মূল টম্বে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে পবিত্র ফাতেহা পাঠ ও দোয়া-মোনাজোতে অংশ নেন। শুক্রবার বিকাল ৪ টায় প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া থেকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
Leave a Reply