সচল ভোমরা বন্দর : আমদানি কমায় রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শঙ্কা


এপ্রিল ২০ ২০২১


মশাল ডেস্ক: করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় চলতি লকডাউনে চালু রয়েছে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর। তবে পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় গতবারের মতো এবারও এই বন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে সি অ্যন্ড এফ ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই বন্দরের অন্য বন্দরের মতো পণ্য আমদানিতে ছাড় না দেয়া ও অভ্যন্তরীণ নানা জটিলতার কারণে বাইরের আমদানিকারকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি বাণিজ্যের ওপর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ৯৮৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। তবে রাজস্ব আদায় হয় ৫৭৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সেবার রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি হয় ৪০৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৮৬ কোটি ২ লাখ টাকা। চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৪০কোটি ৮৩ লাখ টাকা। চলতি মাসে চলছে লকডাউন, সামনে সময় আছে মাত্র দুই মাস।
ভোমরা বন্দরের আমদানিকারক মো. মোহসিন বলেন, ‘বর্তমানে এই বন্দর দিয়ে চাল, পেঁয়াজ, আদা, বিভিন্ন ফল, পাথর, গোখাদ্যসহ বেশকিছু পণ্য আমদানি হচ্ছে। পবিত্র মাহে রমজান ও চলমান লকডাউনের কারণে বাজারে ফলসহ অন্য কাঁচামালের চাহিদা কম তাই, আমদানিও কমিয়ে দিয়েছি। অন্য বন্দরে কাঁচামালে কিছুটা ছাড় থাকায় সেখান দিয়ে বেশি পণ্য আমদানি হচ্ছে। ভোমরা বন্দরে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে, এদের কারণে অনেক ব্যবসায়ী এই বন্দরে আমদানি করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন।’

ভোমরা বন্দর আমদানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু হাসান বলেন, ‘বন্দরের ঠিকাদারের একটি সিন্ডিকেটের সঙ্গে ডাবল লেবার বিল নিয়ে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বন্দরের ব্যসবসীয়দের জটিলতা তৈরি হয়। ঐ সময় প্রায় এক সপ্তাহ পণ্য খালাস বন্ধ ছিল। পরে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসা হয়। তবে এই সময়ে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের অনেকেই অন্য বন্দরে এলসি খুলে পণ্য এনেছেন। যে কারণে এবার লকডাউনে বন্দর চালু থাকলেও আমদানি কিছুটা কমেছে। তাছাড়া পবিত্র মাহে রমজান ও লকডাউনে অনেক ব্যববসায়ী অগ্রিম পণ্য এনে মজুদ রেখেছেন। বাজারে বেচা-বিক্রি কমে যাওয়ায় অনেকে ভারত থেকে পণ্য আমদানি করছেন না।’
ভোমরা স্থলবন্দর কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আবু তাহের বলেন, ‘গত অর্থবছরে করোনা মহামারিসহ নানা কারণে বন্দরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এবার লকডাউনের মধ্যেও বন্দর সম্পূর্ণ চালু রয়েছে। চলতি মাস থেকে হঠাৎ করেই ব্যববসায়ীরা পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে এবারও রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হতে পারে।’
ভোমরা সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, ‘সিন্ডিকেটের বিষয়টি সঠিক নয়। মূলত আমাদানিকারকরা যে বন্দরে ছাড় পাবেন সেখানেই পণ্য আমদানি করেন। বর্তমানে ভোমরা বন্দরে কোনো ছাড় নেই। ফলে অনেক ব্যবসায়ী ভোমরা দিয়ে আমদানি করছেন না। এতে সরকারের যেমন রাজস্ব কমেছে, তেমনি আমরা যারা সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট রয়েছি তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পাশাপাশি অনেক শ্রমিক বেকার হয়েছেন।’

শ্যামনগর

যশোর

আশাশুনি


জলবায়ু পরিবর্তন