রাজধানীর পুরান ঢাকায় মো. সোহাগ নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার ঘটনায় করা অস্ত্র মামলায় ছাত্রদল নেতা তারেক রহমান রবিন আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ গিয়াসের আদালতে স্বেচ্ছায় এ জবানবন্দি দেন তিনি। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
জানা যায়, আসামি তারেক রহমান রবিন রাজধানীর চকবাজার থানার ৩০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রবিনের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা। রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দেন রবিন।
অপরদিকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় টিটন গাজী নামে আরেক আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার (১২ জুলাই) তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিব উল্লাহ পিয়াস ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিডফোর্ডের সামনে ৩৯ বছর বয়সী ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে কুপিয়ে, পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে থেতলে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে এ ঘটনা ঘটে। এ হত্যার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা হয়। গত ৯ জুলাই এ ঘটনায় তার বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে পৃথক মামলা দায়ের করে। এ হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে প্রধান সন্দেহভাজন মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) এবং তারেক রহমান রবিনকে (২২) কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলা ও অস্ত্র আইনের পৃথক দুই মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলায় মাহমুদুল হাসান মহিনকে পাঁচদিন এবং তারেক রহমান রবিনকে অস্ত্র মামলায় দুদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
নিহত মো. সোহাগ কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পূর্ব নামাবাড়ি গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মিটফোর্ড এলাকার ৪ নম্বর রজনী ঘোষ লেনে ভাঙারির ব্যবসা করতেন।
এদিকে পাথর নিক্ষেপ করে প্রকাশ্যে সোহাগকে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় দেশব্যাপী নিন্দা ঝড় উঠেছে।
Leave a Reply