নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার বাঁকালে বিরোধপূর্ণ জমি দখল করতে গিয়ে যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা কয়েকটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বাধা দেওয়ায় এক নারীসহ চারজনকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার রাতে সাতক্ষীরা শহরতলীর বাঁকাল খেয়াঘাট জেলেপাড়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ¡ সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঝাঁটা মিছিল নিয়ে রাতেই সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে জেলেপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ ও শিশুরা।
বাঁকাল খেয়াঘাট এলাকার জেলেপাড়ার পূর্ণিমা মন্ডল, কৃষ্ণা বিশ্বাস, শ্যামলী বিশ্বাসসহ কয়েকজন কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, বংশ পরম্পরায় তারা এখানে বসবাস করে আসছেন। ভোট দেন নৌকায়। জামায়াত বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালিন তাদের উপর এতো অত্যাচার হয়নি। তারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, কোন প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই শহরের দক্ষিণ কাটিয়ার সানাউল¬াহ গাজীর ছেলে মুজিবর পেশকার স্থানীয় পুলিন মাখালের কাছ থেকে ১৫ শতক জমি পাঁচ লাখ টাকায় মৌখিক ভাবে ক্রয় করেন। চলতি বছরের ৯ জুন মুজিবরের ছেলে শুভ কয়েকজন সন্ত্রাসী নিয়ে সুকুমার বিশ্বাসসহ কয়েকজনের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। বাধা দেওয়ায় জয়দেব মাখাল, সহাদেব মাখাল, বিশ্বজিৎ মাখাল, শ্যামলী বিশ্বাস ও সরজিত কাজীকে পিটিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় সুকুমার বিশ্বাস বাদি হয়ে মুজিবর ড্রাইভারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দিলেও পুলিশ মামলা না নিয়ে মীমাংসার নামে কালক্ষেপন করেন। আসামীপক্ষ যুবলীগ নেতা মান্নানের কাছের লোক বিধায় দেড় মাসে পুলিশ কোন মামলা নেননি। এমনকি কোন শালিসি বৈঠক ও করেননি। পূর্ণিমা মন্ডল আরো বলেন, আগের ঘটনায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় যুবলীগ নেতা মান্নানের নেতৃত্বে আবারও হামলা চালানো হয়। যার ভিডিও ফুটেজ তারা সংগ্রহ করেছেন। পূর্ণিমা আরো বলেন, এ হামলার ঘটনায় রাতেই তারা সড়ক অবরোধ করলে মুজিবর ও তার ছেলেকে পুলিশ আটক করলেও আওয়ামী লীগ নেতাদের কথায় ছেড়ে দিয়ে শুক্রবার সকালে থানায় আলোচনায় বসার কথা বলেন। অথচ শুক্রবার হামলাকারিপক্ষ থানায় আসেনি।
এদিকে, বৃহষ্পতিবার রাতেই নিরঞ্জন মাখাল বাদি হয়ে যুবলীগ নেতা আব্দুল মান্নানসহ পাঁচজনের নাম ও অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০জনকে আসামী করে এজাহার দিলেও মামলা এখনও রেকর্ড হয়নি বলে তারা জানান। তবে মামলা রেকর্ড করে আসামী মান্নানসহ অন্যদের গ্রেপ্তার না করলে আবারো সড়ক অবরোধসহ বড় ধরণের কর্মসুচি দেওয়া হবে বলে জানান তারা।
এদিকে, যুবলীগ নেতা আব্দুল মান্নান রাতেই সাংবাদিকদের জানান তিনি এ ধরণের কোন হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, তিনি উভয়পক্ষকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য শুক্রবার সকাল ১০টায় থানার গোলঘরে উভয়পক্ষকে ডেকেছিলেন। কিন্তু মুজিবর পক্ষ দুপুর ১২ টা পর্যন্ত আসেননি। তিনি আরো জানান, ভাঙচুর, লুটপাট ও মারপিটের ঘটনায় নিরঞ্জন মাখাল বাদি হয়ে যে এজাহার দায়ের করেছেন তা আগামী কার পহেলা আগষ্ট রেকর্ড করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply