Site icon Daily Dakshinermashal

রথিশকে হত্যার পর আলমারিতে করে লাশ নিয়ে যাওয়া হয়-র‌্যাব

Spread the love

ডেস্ক রিপোর্ট: রংপুরের জজ আদালতের বিশেষ পিপি রথিশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবু সোনাকে ২৯ মার্চ রাতেই শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্ত্রী দীপা ভৌমিক ও তার ‘কথিত প্রেমিক’ কামরুল ইসলাম জাফরী। হত্যার পর রাতে লাশটি বাড়িতে রাখা হয়। পরদিন সকালে আলমারিতে ভরে লাশটি নিয়ে গুম করা হয়। রংপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ।
বুধবার (৪ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১২টায় রংপুর নগরীর স্টেশন এলাকায় র‌্যাব-১৩ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ বলেন, ‘পারিবারিক কলহ, সন্দেহ ও পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়ে স্ত্রী দীপা ভৌমিক তার স্বামী রথিশ চন্দ্রকে হত্যা করে। এই কাজে সহায়তা করেন তার কথিত প্রেমিক কামরুল মাস্টার।’
র‌্যাবের ডিজি বলেন, ‘গত ২৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) রাত আনুমানিক ১০টার শয়নকক্ষে রথিশ চন্দ্রকে ভাত ও দুধের সঙ্গে ১০টি ঘুমের বড়ি খাওয়ানো হয়। এ সময় তিনি অচেতন হলে স্ত্রী দীপা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর তার লাশ শয়নকক্ষেই রাখা হয়।’
র‌্যাব ডিজি আরও বলেন, ‘পরের দিন শুক্রবার কামরুল মাস্টার ভোর ৫টায় ওই বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে সকাল ৯টায় কামরুল একটি রিকশাভ্যান নিয়ে আসে। পরে তারা লাশ গুম করার উদ্দেশে একটি আলমারি পরিবর্তনের নাম করে সেখানে লাশ ভরে রংপুর নগরীর তাজহাটের মোল্লাপাড়ার নির্মাণাধীন বাড়িতে বালু খুঁড়ে পুঁতে রাখে। আলমারি বহন ও লাশ ভ্যানে তোলার কাজের জন্য তিনজনকে কামরুল মাস্টার আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন।’
বেনজির আহমেদ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রথিশ চন্দ্রের স্ত্রী দীপা ভৌমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসে র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত ১১টায় তাজহাট মোল্লাপাড়া এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের ভেতর থেকে মাটি খুঁড়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে রথিশের ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিককে ঘটনাস্থলে নেওয়া হলে তিনি তার ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বালু খোঁড়াখুঁড়ি ও লাশ লুকানোর সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন সবুজ ইসলাম ও রোকনুজ্জামান। তাদের বাড়ি তাজহাট মোল্লাপাড়া এলাকায়।’
র‌্যাবের মহাপরিচালক বলেন, ‘তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা ২৬ মার্চ কামরুল মাস্টারের নির্দেশে ৩০০ টাকার বিনিময়ে মোল্লাপাড়ার নির্মাণাধীন ভবনের নিচে বালু খুঁড়ে রাখে। পরবর্তীতে ৩০ মার্চ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ওই লাশ বালু দিয়ে গর্তে ঢেকে রাখে তারা। কামরুল মাস্টার তাদের শিক্ষক হওয়ায় তারা আদেশ পালন করেছে বলে জানায়।’
বেনজির আহমেদ বলেন, ‘এই ঘটনায় রথিশের স্ত্রী দীপা ভৌমিক, তার কথিত প্রেমিক কামরুল এবং লাশ লুকিয়ে রাখার সঙ্গে জড়িত মোট চারজনকে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।’
এ সময় র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রংপুর রেঞ্জর ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Exit mobile version