Site icon Daily Dakshinermashal

বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে আশাশুনির ৩ প্রতিবন্ধি স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীগন

Spread the love

আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনিতে বুদ্ধি প্রতিবন্ধি ও প্রতিবন্ধি স্কুলগুলি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিক্ষার্থীদের শারিরিক, মানসিক ও শিক্ষাদানে প্রানপণ চেষ্টা করে করলেও এমপিও ভূক্ত বা বেতন-ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছে শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ। সরজমিনে ঘুরে জানাগেছে, উপজেলায় তিনটি এ ধরনের ৩টি স্কুল রয়েছে। আশাশুনি সদরে অবস্থিত আশাশুনি বুদ্ধি প্রতিবন্ধি স্কুল, দরগাহপুর প্রতিবন্ধি স্কুল ও বুধহাটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়। এর মধ্যে আশাশুনি সদরে অবস্থিত বুদ্ধি প্রতিবন্ধি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী এ প্রতিবেদককে জানান, স্কুলের ২০০০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০৪ সালে সমাজ সেবা অধিদপ্তর সাতক্ষীরা থেকে ৫৩৭/০৪ নং নিবন্ধনভূক্ত হয়। ২০০৬ সালে প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী সাভার (ঢাকা) থেকে সিডিডি প্রশিক্ষন গ্রহন করে সনদ প্রাপ্ত হন। ২২ ডিসেম্বর’১৫ তারিখে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রালয় থেকে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হয়। বর্তমানে এ স্কুলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা রয়েছে ২২১ জন। এ স্কুলের শিক্ষক, অফিস সহকারি, কর্মচারী, ভ্যান চালক ও ছয়টি ভ্যান সহ মোট ৪৫ জন রয়েছে। স্কুলের নিজস্ব ভবন নির্মানের জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী বরাবর স্থানীয় সমাজ সেবক সদরের দূর্গাপুর গ্রামের জনৈক জাহাঙ্গীর হায়দার লালু ৬ জুলাই’১৭ তারিখে ১৯৭৮ নং দলিল শূলে ওই মৌজায় ১৫ শতক জমি দান করেছেন। স্কুলের ১১ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা পর্ষদের এসএমসি সভাপতির দায়িত্বে আছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। স্কুল কার্যক্রমের মূল ভিত্তি করা হয়েছে অটিজম, দৃষ্টি, বাক, শ্রবন, মানসিক, সেরিগাল পলসি ও ডাউন সিনটম (অদৃবাশ্রমসেড)। এ স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের আচার-আচারণ, জীবন দক্ষতা, পাঠদান ও শিক্ষাদান, কারিকুলাম (সহপাঠ ক্রমিক) বিষয়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের মূল ¯্রােতধারায় ফিরিয়ে আনার নিমিত্ত্বে নিরন্তর প্রচেষ্টা দৃশ্যমান হয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বিবাহ যোগ্য কন্যদের বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষন শেষে সনদপত্র ও পর্যায়ক্রমে সাধ্য অনুযায়ী সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে এ সব কার্যক্রম ইতোমধ্যে পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করেছেন, সমাজ কল্যান মন্ত্রানালয়ের যুগ্ম-সচিব উমর ফারুক চৌধুরী, সুলতান মাহমুদ, নুরুল কবির সিদ্দিকী, সংরক্ষিত মহিলা এমপি রেফাত আমিন, অধ্যাঃ আ.ফ. ম রুহুল হক, জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, আবুল কাসেম মুহাঃ মহিউদ্দীন, উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম, ইউএনও মমতাজ বেগম, সুষমা সুলতানা, জেলা প্রতিবন্ধি সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের অফিসার তুলসি কুমার পাল সহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিবৃন্দ। এত কিছুর পর সরকারের ঘোষনা ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টির কারনে ৪৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে মাত্র ৫ জন শিক্ষক ও ৩ জন কর্মচারী ২৪ মে’১৭ তারিখে এমপিও ভূক্ত হলেও (বাকীদের কথা তো দূরে থাক) অদ্যবদি তাদের কোন বেতন ভাতা আসেনি। ফলে সকল শিক্ষক-কর্মচারীগন বিনা বেতন-ভাতায় দীর্ঘদিন এ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে নিরলস কাজ করতে করতে হাফিয়ে উঠেছে। অপর দিকে, উপজেলার দরগাহপুর প্রতিবন্ধি স্কুল ও বুধহাটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয় এত বেশী কার্যক্রমে জড়িত না থাকলেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে প্রায় এ স্কুলের পাশাপাশি অবস্থান করছে বলে জানাগেছে। সব বিবেচনা করে সরকারি নীতিমালার আলোকে এ স্কুল গুলির শিক্ষক-কর্মচারী, ভূক্তভোগী অভিভাবক ও এলাকার সচেতন মহল উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Exit mobile version