Site icon Daily Dakshinermashal

তালার বেগুনদাড়া খালের মাটি যাচ্ছে জামায়াতের অর্থ যোগানদাতার ইটভাটায়!

Spread the love

বিশেষ প্রতিবেদক: তালা উপজেলার খলিষখালি ইউনিয়নের বেগুনদাড়া খালের মুখ বেধে পানির প্রবাহ বন্ধ রেখে মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, গত দু’সপ্তাহ ধরে উপজেলার ইসলামকাটি মোড়ের মেসার্স রাণী এন্ড সানি ব্রিকস মালিক জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা আব্দুল খালেক স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ৩-৪টি এক্রাভেটর (খনন যন্ত্র) দ্বারা প্রতিদিন লাখ লাখ ঘনফুট মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে বানিজ্যিক ভাবে ইট তৈরী করছেন ।
এ নিয়ে খালের পশে বসবাসকারীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, মাসখানেক পূর্বে ঐ খালের কৃষ্ণনগর ব্রীজের নিচে মুখ বেধে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে করে ঐ এলাকার চিংড়ি ঘেরগুলো পানির অভাবে কোটি কোটি টাকার মৎস্য চাষে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিনিয়ত ৩-৪টি এক্্রাভেটর মেশিন দ্বারা মাটি কেটে ৫-৬ টি ট্রাকে ভর্তি করে এলাকার একমাত্র চলাচলের গ্রামীণ সড়ক দিয়ে অবিরাম নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। গ্রামের ছোট রাস্তা দিয়ে বার বার ট্রাকে করে মাটি নিয়ে যাওয়ার ফলে পিচের উপর কাদামাটি পড়ে পথচারিদের চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। তাছাড়া মাটি ভর্তি ট্রাকের চাপে সড়ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অপরিকল্পিত ভাবে খালের মাটি কেটে ইটভাটায় নেয়ায় বর্ষা মৌসুমে তীরবর্তী বসবারত বাসিন্দারা জলাবদ্ধতা আতঙ্কে রয়েছেন। তীরে বসবাস কারি গাছা গ্রামের যমুনা রাণী, (৬৫) অভিযোগ করে বলেন, এভাবে খালের মাটি কেটে নিলে বর্ষাকালে জলে ডুবে মরতে হবে। তাছাড়া রাস্তা নষ্ট হয়ে জনসাধারণের চলাচলে ভোগান্তির অন্ত থাকবে না। কৃঞ্চনগর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় সরকার, রাহুল সরকার, তন্ময় সরকার,ও অভিজিৎ সরকারসহ অনেকের অভিযোগ, খালের মুখ বেধে পানির প্রবাহ বন্ধ করে মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ায় এলাকার মৎস্য চাষে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
এদিকে মৎস্য ব্যবসায়ী ওয়ার্কাস পার্টির নেতা মাধবচন্দ্র মন্ডলের অভিযোগ, সরকারের পরিকল্পনা ছাড়া খালের মাটি কেটে ইট ভাটায় নেয়ার কোন সুযোগ না থাকলেও জামায়াত নেতার অদৃশ্য শক্তিতে খালের মাটি কেটে ইট ভাটায় নেওয়ায় তিনি বিস্মিত হন । প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাবির হোসেনের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিকল্পনা বিহীন খালের মাটি কাটা সম্পূর্ণ অবৈধ। খলিষখালি ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান জানান, এলাকার জলবদ্ধতা দুরীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয়ভাবে সিন্ধান্ত নিয়ে ইটভাটা মালিককে মাটি কেটে নিতে বলা হয়েছে। খালের মাটি কর্তনকারী ইটভাটা মালিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি যথাযত কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি নিয়েই মাটি কাটছেন বলে জানান ।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি দেখছি বলে এড়িয়ে যান। জেলা প্রশাসক মো. ইফতেখার হোসেন জানান, সরকারি খালের মাটি কাটার সুযোগ কারও নেই, যদি কেও এধরণের কাজ করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. মুস্তফা লুৎফল্লাহ’র কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, জামায়াতের অর্থযোগান দাতা একাধিক নাশকতা মামলার আসামী খালেক কি অলৌকিক ক্ষমতা পেয়েছে? সরকারি খালের মাটি কাটার ক্ষমতা তাকে কে দিয়েছে ? আমি দেখছি।
স্থানীয় জনসাধারণ অতিসত্বর অবৈধ্যভাবে মাটি কাটা বন্ধ ও এ কাজের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।

Exit mobile version